বুধবার । ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ । ২রা আশ্বিন, ১৪৩২

আফগানিস্তানকে হারিয়ে সুপার ফোরের আশায় বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

পেন্ডুলামের মতো দুলেছে ম্যাচের ভাগ্য। জয়ের কাঁটা একবার বাংলাদেশের দিকে তো আরেকবার আফগানিস্তানের দিকে হেলেছে। রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়ে বসা ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত ৮ রানের জয় পেয়েছে লিটন দাসের দল। সেই সঙ্গে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সুপার ফোরের আশাও বাঁচিয়ে রাখল টিম টাইগার্স।

জিতলে টিকে থাকবে আশা, হারলেই বিদায়-কার্যত বাঁচা-মরার এমন সমীকরণের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ যখন আফগানিস্তান, ভয়টা কিছুটা ছিলই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে ছড়ি ঘুরানো রশিদ খানদের বিপক্ষে শুরু থেকেই দাপট বজায় রাখে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে শুরুর ঝলক শেষ দিকে মিলিয়ে গেলেও বল হাতে আগুনে শুরু এনে দেন নাসুম-রিশাদরা। আর তাতে বিদেশের মাটিতে আফগানদের প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে হারাল লাল-সবুজের দল।

পরদে পরদে উত্তেজনার ম্যাচে ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান জোড়া শিকার করে টাইগারদের জয় পাকাপোক্ত করেন। যদিও শেষদিকে তাসকিন আহমেদের ছন্নছাড়া বোলিং কিছুটা শঙ্কা তৈরি করেছিল।

আবুধাবিতে গতকাল মঙ্গলবার আফগানদের ৮ রানের ব্যবধানে হারায় লাল সবুজরা। ১৫৫ রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সব কটি উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানে থামে রশিদের দল। ২৮ রান খরচায় টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মোস্তাফিজ। দারুণ বোলিংয়ে ১ মেডেনসহ মাত্র ১১ রান খরচায় ২ উইকেট নেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। এই ম্যাচে নাসুম আহমেদ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।

‘বি’ গ্রুপে এদিন রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ উপভোগ করলেন সমর্থকরা। ১৩ ওভার শেষে ৭৭ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট হারিয়েছিল আফগানিস্তান। জয়ের আবহ তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের পক্ষে। তবে আজমতউল্লাহ ওমরজাই হঠাৎ বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে ভীতি ছড়ান টাইগার শিবিরে। পার্ট টাইম বোলার সাইফ হাসানকে ১৪তম ওভারে পেয়ে ২ ছক্কা ও এক বাউন্ডারিতে ২০ রান তুলে নেন। পরের ওভারে কিছুটা মিতব্যয়ী বল করে টাইগারদের চাপ কমান রিশাদ। ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে তাসকিনকে ৯৯ মিটারের বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে আবার আতঙ্ক তৈরি করেন আজমতউল্লাহ। পরের বলে ফের তুলে মারতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাইফের হাতে ক্যাচ দেন আজমতউল্লাহ। ১৬ বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ৩০ রানে থামে তার ইনিংস। কিছুটা স্বস্তি পায় বাংলাদেশ।

কিন্তু রশিদ খান নেমে ফের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করেন। তার ব্যাটে জয়ের আশা পাচ্ছিল আফগানিস্তান। শেষমেশ ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোস্তাফিজের বলে স্লিপে তাসকিনকে ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি। ১১ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২০ রান করেন রশিদ। পরের বলেই এএম গজানফারের উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয় পাকাপোক্ত করে নেন মোস্তাফিজ।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২২ রান। হাতে ১ উইকেট। আফগানদের চাপে থাকার বদলে উল্টো তাসকিনকে তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে চাপে ফেরেন নুর আহমেদ। তবে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেননি এ ব্যাটার। যদিও পঞ্চম বলে আরেকটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনি। শেষ বলে ফের সীমানার উপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে নুরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়েন। ৮ রানের জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা।

এদিন শুরুতে বল হাতে চমক দেখিয়েছিলেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। মেইডেন দিয়ে প্রথম ওভারে তুলে নেন সেদিকউল্লাহ আতলের (০) উইকেট। পঞ্চম ওভারে ফের ইব্রাহিম জাদরানকে (৫) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে চাপ তৈরি করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও গুলবাদিন নাইব ম্যাচের হাল ধরেন। নবম ওভারে এসে তাদের ৩৩ রানের জুটি ভাঙেন রিশাদ। ১৪ বলে ১৬ রান করে টাইগার লেগ স্পিনারের বল পড়তে ভুল করে তাকেই ক্যাচ তুলে দেন গুলবাদিন। এক ওভার পর আক্রমণে এসে গুরবাজের উইকেটও তুলে নেন রিশাদ। ৩১ বলে ২ ছক্কা ও ২ চারে ৩৫ রানে থামেন গুরবাজ। এরপর মোহাম্মদ নবি ক্রিজ আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করলেও মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন। ১৫ বলে ১৫ রানে থামেন তিনি।

খুলনা গেহেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন